বাবা হওয়ার আনন্দ ও মা-বাবার ঋণ | জীবনের শিক্ষা
জীবন আমাদের প্রতিটি মুহূর্তে অমূল্য শিক্ষা দিয়ে যায়। কিন্তু আমরা প্রায়ই ছোট ছোট ঘটনাগুলোকে তুচ্ছ মনে করি। সম্প্রতি এক বর্ষার সন্ধ্যায়, কোনো কাজ না থাকায় ঘরের জিনিসপত্র গুছাতে গিয়ে এক অমূল্য স্মৃতির সন্ধান পেলাম।
ঘরের জিনিসপত্র গুছাতে গিয়ে বাবা লিখিত একটি ডায়েরী পেলাম। লেদারের মোড়কে বাঁধা এই ডায়েরীটি দেখতে আকর্ষণীয় ছিল। প্রথম পাতায় লেখা ছিল “পুত্রধন”।
পুত্রধন হারানোর বেদনা
ডায়েরীতে বাবা লিখেছেন, জন্মের পরেই বড় ভাই মারা গিয়েছিলেন। সেই কারণে বাবার কাছে পুত্রধন হারানোর বেদনাটা গভীর। বাবার লেখায় বোঝা যায়, বাবা হওয়া কত আনন্দের এবং একমাত্র বাবারাই এই অনুভূতি সম্পূর্ণভাবে বোঝতে পারেন।
বাবা লিখেছেন:
“পুত্রধন আজ হারিয়ে ফেলেছি নিয়তির কাছে, তাই হার মেনেছি।”
এই ছোট ছোট ঘটনা আমাদের শেখায়, বাবা হওয়া শুধুই দায়িত্ব নয়, এটি একটি অমূল্য অনুভূতি ও আনন্দ।
বাবার ত্যাগ ও প্রেম
বাবা সারারাত আমাকে কোলে নিয়ে হেঁটে হেঁটে রাত পার করতেন। জন্মের মাত্র দেড় থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে ডাক্তার আনা, ঋণ নেওয়া—সবই বাবার ত্যাগের উদাহরণ।
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাবা আমাকে বুকে নিয়ে জীবন রক্ষা করেছিলেন। সেই কঠিন পরিস্থিতিতেও বাবার সাহস, প্রয়োজনের মুহূর্তে ত্যাগ স্পষ্ট।
বাবা সারাদিন কাজ করেও আমার চিকিৎসার সব খরচ বহন করতেন। ছোট্ট ঘটনার মধ্যেই প্রকাশ পায় বাবা-মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
বাবা-মায়ের ঋণ
বাবা ও মা আমাদের জন্য যা করে, তা কখনো ঋণ শোধ করা যায় না। যেমন গল্পে, স্কুল থেকে ফিরে ছেলেকে আইসক্রিম কিনে দেওয়ার জন্য টাকা দেওয়া—শেষ পর্যন্ত বুঝলাম, যা আমরা মা-বাবাকে দিই তা দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসে।
প্রত্যেক সন্তানের উচিত মা-বাবার যত্ন ও সেবা করা। তাদের সুখ ও সুরক্ষা আমাদের প্রথম কর্তব্য।
উপসংহার
বাবা-মায়ের ভালোবাসা ও ত্যাগ কখনো মাপা যায় না। জীবন আমাদের শেখায়:
বাবা-মায়ের সেবা ও সম্মান অপরিহার্য।
ছোট ছোট যত্নের কাজও তাদের কাছে অমূল্য।
সন্তান হিসেবে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশ করা উচিত।
🌟 ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা-মা। তারা প্রতিটি সন্তানের জীবনে সুপারহিরো।
0 Comments